দেশের তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার সংক্রমণ। জেলা, উপজেলা এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোগী। তবে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে করোনাভাইরাস মহামারী রূপ নিয়েছে। ৬৬ দিন সাধারণ ছুটিসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আইইডিসিআরের সর্বশেষ তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরীতেই অর্ধেকের বেশি রোগী।
রাজধানী ছাড়া অন্যান্য জেলায়ও বাড়ছে করোনা। গত পাঁচ দিনে চট্টগ্রামে প্রায় এক হাজার, কুমিল্লা, গাজীপুর, কক্সবাজার, খুলনায় প্রায় পাঁচশত করে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে তিন পাবর্ত্য জেলাতেও। গত পাঁচ দিনের ব্যবধানে বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় শনাক্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। মাত্র চারটি জেলায় এখনও একশ’র নিচে রয়েছে শনাক্তের সংখ্যা।
বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনাক্তের ১০০তম দিনে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮। শুরুর দিকে ঢাকা ও আশপাশে কয়েকটি জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছিল। এসব এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে আক্রান্তরা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। সেভাবেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শুরুতে করোনাভাইরাসটির নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমদিকে শনাক্ত রোগী চিহ্নিত করে তাদের আইসোলেশনে নেয়া হলে সারাদেশে এভাবে ছড়িয়ে পড়তো না। এছাড়া দুই মাসের বেশি সময় সারা দেশে সাধারণ ছুটি থাকলেও তখন স্বাস্থ্যবিধিগুলো যথাযথভাবে পালন করেনি। রাজধানীসহ আশপাশে সংক্রমিত জেলা থেকে অবাধে লোকজন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এরফলেই সংক্রমণের রাশ টানা সম্ভব হচ্ছে না।
আইইডিসিআরের ২৭ জুন পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরীতে মোট রোগী ৭৪ হাজার ৫১৬ জন। এরপরেই রয়েছে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় যথাক্রমে ৭৬২৫, ৪৯৭৯ ও ৩২৭০। দুই থেকে তিন হাজারের মধ্যে শনাক্ত হয়েছে চারটি জেলায়। এগুলো হল- ঢাকা জেলায় ২৯৯৬, কুমিল্লা-২৯৯৪, কক্সবাজার-২৩৯৯ ও বগুড়ায় ২৬৮৬ জন। এক হাজার থেকে দুই হাজারের মধ্যে রয়েছে নয়টি জেলা। সেগুলো হচ্ছে- সিলেট-১৯৮৫, নোয়াখালী-১৯৭১, মুন্সীগঞ্জ-১৯২৫, ময়মনসিংহ-১৬১৩, ফরিদপুর-১৭৪০, বরিশাল-১৩৮২, নরসিংদী-১৩১৯, কিশোরগঞ্জ-১৩৪২, খুলনা-১৫৪৫ জন। ৫০০ থেকে এক হাজারের মধ্যে শনাক্ত হওয়া জেলাগুলো হচ্ছে- সুনামগঞ্জ-৯০৮, রংপুর-৮৬০, লক্ষ্মীপুর-৭৫৮, ফেনী-৭৯৭, মাদারীপুর-৬৩০, চাঁদপুর ৭৫২, বি-বাড়িয়া-৭৩৩, দিনাজপুর-৫৬৩, গোপালগঞ্জ-৫৮৬, মানিকগঞ্জ-৫৫৫, জামালপুর-৫৪২, যশোর-৫১৪, কুষ্টিয়া-৫৩১, হবিগঞ্জ-৫১৫ ও টাঙ্গাইল-৫২৮ জন। পাবনা-৪২৯, শরিয়তপুর-৪১৩, রাজশাহী-৪৭১, নেত্রকোনা ৪৫৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
অন্য জেলাগুলোর মধ্যে নীলফামারি-৩২৫, মৌলভিবাজার-৩৭৬, সিরাজগঞ্জ-৩৬১, জয়পুরহাট-২৫৭, পটুয়াখালী-৩১৪, নওগাঁ-৩২৭, রাজবাড়ী-৩৩১, গাইবান্ধা-২৪৭, শেরপুর-২২১, ভোলা-২৩৬, ঠাঁকুরগাঁও-২০১, চুয়াডাঙ্গা-২০৪, বরগুনা-১৮৬, নাটোর-৩২৫, পিরোজপুর-১৭৩, পঞ্চগড়-১২৯, ঝালকাঠি-১৯২, ঝিনাইদহ-১৬৫, কুড়িগ্রাম-১৩০, রাঙ্গামাটি-২২৩, বান্দরবন-২৯৫, বাগেরহাট-১৬৬,সাতক্ষীরা-১০৮, খাগড়াছড়ি-২১৩, নড়াইল-১৫৪, চাঁপাই-৯৫, লালমনিরহাট-৮৮, মেহেরপুর-৫৯ ও মাগুরা-৯৮ জন।